Sunday, July 02, 2006

খাঁচা


চারপাশে কতগুলো খাঁচা নিয়ে মহিলা বসে আছেন উত্সুকচিত্তে ৷ খাঁচাগুলো থরে থরে সাজানো অনেকটা ঘাসের মতন ৷ চারপাশে এত চিত্কার আকাশ চোখেই পড়ে না ৷

বেশ কিছুদিন আগে সবুজ রঙ করা হয়েছিল খাঁচাগুলোতে, কালান্তে সেটা বোঝা গেলেও খুব বেশি রঙ আর বেঁচে নেই ৷

আসলে বেশিরভাগ খাঁচার ভেতরই টিয়া, খাঁচাগুলো তাতেই কিঞ্চিত সবুজ হয়ে থাকবে ৷ কোথাও মস্ত রুটির ঢাকনার তলায় ফুটফুটে দুটো সাদা ইদুর ৷ কয়েকটা খরগোশ ৷ খরগোশের বাচ্চারা ঠান্ডায় একসাথে চুপটি করে বসে ৷ কাঁপছে, ক্রমাগত উত্তেজনায় যেমন কাঁপে উরু ৷


চারিদিকে থরে থরে সাজানো খাঁচা ৷ আসলে সেগুলো লোহার কিছু তার , সোজা, বাঁকা বা এমনটাই রুলটানা খাতা যেন ; অক্ষরের যেমন নিয়তি তাতে আটকা পড়া, কিংবা সবুজ গাছ কিছুটা নিরাপদ মনে করে এমনি বেষ্টনির আড়ালে ৷ কতগুলো লোহার লাইন, সোজা কিংবা বাঁকা - তা বই তো আর কিছু নয় ৷ খরগোশেরা নিরাপদ মনে করে না, ঠিকমত জানেও না তারা খাঁচার বাইরে আছে না ভিতরে ৷ সেই মহিলাও একরাশ হৈ হট্টগোলের মধ্যে চারপাশের চারপাশের খাঁচার দূর্গ ঝুলিয়ে বসে আছে স্থির ৷এমন মহিলার মুখ স্পষ্ট করে মনে পড়ে না, তার শাড়ির রঙ ও নয় ৷ তবু খাঁচাগুলোর রঙ সবুজ বলে মনে হয় ৷


সেই খরগোশগুলোর কথা মনে পড়ে ৷ কুকুর শিয়ালের তাড়া খেয়ে ছুটেছিল দিকভ্রান্তের মত ৷ জন্গলে এমন প্রাণী কতই তো মরে ৷ এ ওকে না মারলে তো ইশেসিষ্টেমের দোহাই ৷ এই রকম দু'চারটে খরগোশ ব্যস্ত শহরের খাঁচায় ভরে না রাখলে কথামালা পড়া শিশুরা , আমার মত, জানতেও পারতো না খাঁচা জিনিসটা খুব একটা জরুরি নয় ৷ সবাই খাঁচায় থাকতে বেশ ভালো বাসে ৷ খরগোশের চোখে দেখলে একটা খাঁচার মধ্যে এতগুলো মানুষ, ব্যস্ত শহর, মস্ত বাজার, হাঁটা-চলা, হট্টগোল, ভুলে যাওয়া আকাশ ৷ খাঁচার বাইরে গুটিসুটি মারে থরথর করে কাঁপা খরগোশের বাচ্চা ৷ কেবল এবং নিরাপদ ৷


নয়ডা, উত্তরপ্রদেশ ১৷২৷২০০৪

1 comment:

Anonymous said...

Thought I would comment and say neat theme, did you make it for yourself? It's really awesome!